“অধিকার প্রতিষ্ঠায় একদল উদ্যমী রাজনীতিবিদ: জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ”
রাজনীতিতে নৈতিকতার গুরুত্ব অপরিসীম। আজ এক কথা বলে, কাল পুরোপুরি উল্টো কথা বললে রাজনীতিকদের গ্রহণযোগ্যতা ও নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। নৈতিকতাহীন রাজনীতি ও নেতৃত্ব একসময় অচল মুদ্রায়! পরিণত হয়। বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নৈতিক ভিত্তিতে বলীয়ান একদল উদ্যমী
রাজনীতিবিদের খুব প্রয়োজন। ঢাকায় “জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ” আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় এর সমন্বয়কারী মজিবুর রহমান মন্জু এসব কথা বলেন। তিনি বলেন ক্ষমতাসীনরা নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে বল প্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বসে আছে। বিপরীতে দুর্বল ও দিশেহারা বিরোধী দলও আজ নীতি, নৈতিকতা হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম।
আজ শনিবার বিকেল ৪ টায় ধানমন্ডির একটি অডিটরিয়ামে, জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ- ঢাকা মহানগরের দুই শতাধিক নেতা ও সংগঠকদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। মজিবুর রহমান মন্জুর সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ড ও অঞ্চল থেকে আগত নেতা ও সংগঠকগণ তাদের মতামত তুলে ধরেন। জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশের পরিকল্পনা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরে সভায় বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী তাজুল ইসলাম, খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মেজর (অব:) ডাক্তার আব্দুল ওহাব মিনার, সাবেক ছাত্র নেতা ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান, এইবেলা সম্পাদক সুকৃতি কুমার মন্ডল, ডা: সৈয়দ আসিফ, সাবেক জাসদ ছাত্রলীগ নেতা ইবনুল সাঈদ রানা, জাস্টিস এন্ড পিস্ পার্টির প্রতিনিধি মহিউদ্দিন হিমেল, বিশিষ্ট শিল্পেদ্যাক্তা একেএম মোস্তফা বিন মালেক ও মাওলানা আব্দুল কাদের প্রমূখ।
এসকল বক্তারা তাদের বক্তব্যে দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, কখনো, কোথাও বিভিন্ন তত্ত্ব ও মতবাদের নামে, আবার কোথাও কমিউনিজমের নামে, মডেল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সকল উদ্যোগ বার, বার স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদে পরিণত হয়েছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল অংশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সমন্বিত ও জোরদার করা না গেলে, বাংলাদেশ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। আবার যদি এদেশের মানুষ গণতন্ত্র ফিরে পায়, তাহলে সে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই অব্যাহত ও ক্রমাগত ভাবে চলিয়ে যেতে না পারলে, সেই গণতন্ত্রকে রক্ষা করা যাবে না, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়াও সম্ভব হবে না।
সভায় কমিটি সমূহের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হয় এবং সারাদেশে সফর ও আগ্রহী নাগরিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সভায় বক্তাগণ বলেন ক্ষমতাসীনরা বিরাজনীতিকী করণের যে প্রক্রিয়ায় দেশকে ঠেলে দিয়েছে তাতে সরকার বিরোধীদল কারোর প্রতিই আর জনমানসে কোন আগ্রহ নেই। জনগণ বিশ্বাসযাগ্য নতুন রাজনীতির উত্থান চায়। যে রাষ্ট্র নাগরিকের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনা সে রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও রাজনীতির সংস্কারই হবে জন আকাঙ্ক্ষার প্রধান অঙ্গীকার।
সম্প্রতি আশংকাজনক হারে নারী ও শিশুর সম্ভ্রমহানীর ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয় এ রাষ্ট্রে শিশু নারী বৃদ্ধ সবাই নিরাপত্তাহীন। রমজানে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি ও ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ বিমানের দূর্ঘটনাকে ভয়াবহ প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রাশাসনিক ব্যর্থতার নজীর বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।
স্বাধীন সত্তার বিকাশে অধিকার ও কল্যান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আদর্শ ঘোষনা করে গত ২৭ এপ্রিল “জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ” নামে যে রাজনৈতিক উদ্যোগের সূচনা হয় তাতে সকল কে অংশগ্রহণের উদাত্ত সভায় আহবান জানানো হয়।